প্রতিদিনের চট্টগ্রাম ডেস্ক :
অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল কর্তৃক অব্যাহতভাবে ফিলিস্তিনে নারকীয় গণহত্যা, দখলদারিত্ব ও জাতিগত নির্মূল অভিযান ও গাজায় নারী-শিশু হত্যা, হাসপাতাল-উপাসনালয় ধ্বংস, পানি ও খাদ্য অবরোধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের প্রতিবাদে মানবাধিকার সংস্থা র্যাডিকেল ইন্টার্ন্যাশনাল ও চট্টগ্রামভিত্তিক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় গবেষণামূলক সংগঠন চট্টগ্রাম সংস্কার চিন্তার যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন সংহতি মঞ্চ’ – এর ব্যানারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ‘বাংলাদেশ – ইসরাইলের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কূটনৈতিক সামরিক, প্রযুক্তিগত ও বাণিজ্যিক সর্বপ্রকার সম্পর্ক এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা স্থায়ীভাবে বাতিল দাবীর পাশাপাশি আরও কিছু দাবী উত্থাপন করা হয়।
এ বিষয়ে র্যাডিকেল ইন্টার্ন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব এবং বাংলাদেশ -ফিলিস্তিন সংহতি মঞ্চের মুখ্য সমন্বয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এস এম ইকরাম হোসাইন বলেন – Friendship to All, malice towards none’ – সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে শত্রুতা নয় – এমন লেজুড়বৃত্তিক পররাষ্ট্রনীতি আমরা চাইনা; আমদের রাষ্ট্রীয়ভাবে স্পষ্ট করতে হবে আমরা জালিমের পক্ষে না মজলুমের পক্ষে, ন্যায্যতার পক্ষে না অন্যায়ের পক্ষে! আর তাই বাংলাদেশের ইকোনোমি বাঁচাতে, বয়কটের নামে লুটেরাদের হাত থেকে আমাদের ব্যবসায়ী ভাইদের রক্ষা করতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশে ইসরায়েলী যেসকল কোম্পানীর পণ্য আমদানী ও বাণিজ্যিকীকরণ হয় তা রাষ্ট্রীয়ভাবে তালিকা প্রকাশ করে কঠোর পলিসি গ্রহণ করতে হবে।
সংহতি মঞ্চের মুখপাত্র এ্যাড মিজানুর রহমান সামির সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আলহ্বাজ শামসুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন, হিজরি নববর্ষ উদযাপন পরিষদের কো-চেয়ারম্যান মাস্টার আবুল হোসাইন, স্বপ্নযাত্রী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক রুবেল মাহমুদ, সংহতি মঞ্চের সহ-সমন্বয়ক মো: ইলিয়াসসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে ‘বাংলাদেশ -ফিলিস্তিন সংহতি মঞ্চ’-এর পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবী পাঠ করেন সহ-সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম সংস্কার চিন্তার মুখপাত্র স্থপতি আকরামুল হোসাইন বাপ্পী।
দাবীসমূহ –
১. বাংলাদেশ-ইসরাইল কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা স্থায়ীভাবে বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
২. পতিত স্বৈরাচারের আমলে সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার অতীত চুক্তিসমূহ জনসমক্ষে প্রকাশ করে তা বাতিল করতে হবে।
৩. ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যার প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কর্মসূচি পালন করতে হবে।
৪. জাতিসংঘে ইসরাইল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি বাতিলের জন্য ও মানবতার শত্রু নেতানেয়াহুর সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে বিশ্ব-দরবারে প্রস্তাব প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৫. বাংলাদেশ থেকে যারা ইসরাইলের সঙ্গে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে সম্পর্ক স্থাপন বা সহযোগিতার পেছনে জড়িত ছিল কিংবা আছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. গুজব প্রতিহত ও দেশীয় অর্থনীতি বাঁচাতে
রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসরায়েলি পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের
তালিকা প্রস্তুত করে তা দেশে আমদানী ও বাণিজ্য নিষিদ্ধকরণে পলিসি তৈরী করতে হবে।
৭. ইসরাঈলী পণ্য বয়কটের অজুহাতে যারা স্বদেশী ব্যবসায়ী ভাইদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং পণ্য লুটপাট করেছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এবং ভবিষ্যতে এধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও মব ভায়োলেন্স সৃষ্টির সকল সুযোগ বন্ধ করার নিমিত্তে প্রশাসনিক যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।