প্রতিদিনের চট্টগ্রাম ডেস্ক:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একসময়কার আলোচিত নাম নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাসিরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে রেলওয়ের দক্ষিণাঞ্চলীয় সদর দপ্তরের টেন্ডারবাজিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত শিশুখুনসহ জোড়া খুন মামলার অন্যতম আসামি টিপু। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডারবাজি, অবৈধ শিক্ষক নিয়োগ, ভর্তি বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, নারী কেলেঙ্কারি ও ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এই টিপুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে যার নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিল, তিনি হলেন সাবেক চবি ছাত্রলীগ নেতা নেজাম উদ্দিন।
তথ্যানুসারে, রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নের বাসিন্দা নেজাম উদ্দিন ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আঞ্চলিক সংগঠন ‘রাঙ্গুনিয়া স্টুডেন্টস ফোরাম’-এর দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সংগঠনটি তাকে বহিষ্কার করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সে সময় নেজাম তৎকালীন সাংসদ ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ছত্রছায়াতেও বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিল।
এমন একটি বিতর্কিত অতীতের পর, চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের পর থেকে হঠাৎ করেই নেজামের পরিচয় বদলে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে জামায়াতে ইসলামী ঘরানার প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি স্থানীয় জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে তার উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
রাঙ্গুনিয়ার এক সিনিয়র সংবাদকর্মী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) অভিযোগ করে বলেন—
“জুলাই আন্দোলনের পর নেজাম স্থানীয় মুখোশ বদলানো কিছু চিহ্নিত দুষ্কৃতকারীর সঙ্গে মিলে ভূঁইফোড় ‘রাঙ্গুনিয়া প্রেস ক্লাব’ নামের একটি সংগঠন বানিয়েছে। এরপর ফেসবুক ও অনলাইনভিত্তিক ভুয়া পেইজ খুলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নামে গুজব ও অপপ্রচার চালিয়ে চাঁদাবাজি করছে। এতে মূলধারার সাংবাদিকদের সংগঠন ‘রাঙ্গুনিয়া প্রেস ক্লাব’ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান,“বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে একাধিকবার অবগত করা হলেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এলাকার অনেকে নেজাম ও তার সহযোগীদের আসল পরিচয় জানলেও ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। এরা মূলত কোনো রাজনৈতিক দলের প্রকৃত কর্মী নয়, বরং সুযোগসন্ধানী দুষ্কৃতকারী।”