প্রতিদিনের চট্টগ্রাম ডেস্ক
আজ ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখ বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে ‘ই-কমার্সে নারী উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনা, প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম এর সার্বিক সহায়তায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় মহিলা সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত তথ্য আপা: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর অংশ হিসেবে উক্ত সেমিনারটির আয়োজন করা হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য আপা প্রকল্পের সম্মানিত প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব)জনাব শাহনাজ বেগম নীনা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত উপ-প্রকল্প পরিচালক জনাব এস এম নাজিমুল ইসলাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত যুগ্মসচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী। সেমিনারটির সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব মো: কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রেখা রানী দাস, তথ্য সেবা কর্মকর্তা, কর্ণফুলী উপজেলা।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর তথ্য আপা প্রকল্পের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। বর্তমানে দেশের ৪৯২ টি উপজেলায় এ প্রকল্পের আওতায় তথ্য, পরামর্শ ও সেবা প্রদান করা হচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, আইনি পরামর্শ, শিক্ষা, প্রযুক্তি, পরিবার পরিকল্পনা সহ মোট ৬ টি বিষয়ে ডোর টু ডোর সেবা প্রদানের মাধ্যমে এ প্রকল্পের অধীন নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সিনিয়র প্রশিক্ষক জনাব রাকিবুল হক। তার উপস্থাপনায় নারীদের সম্ভাবনা ও নারীর ক্ষমতায়নের পথে যেসব প্রতিবন্ধকতা সমাজে বিদ্যমান রয়েছে এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় উঠে আসে। তিনি বলেন, আজকের দিনের প্রতিপাদ্য হওয়া উচিত আমরা নারী, আমরাই গড়ি। সারা বিশ্বে মাত্র ২ শতাংশ নারী ব্যবসায় বিনিয়োগের মতো আর্থিক সামর্থ্য রাখেন। ই-কমার্সে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি করে নারীর ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজন সঠিক দিক নির্দেশনা ও যথাযথ প্রশিক্ষণ। এক্ষেত্রে নারীর পাশাপাশি পুরুষের সচেতনতাও জরুরী। বর্তমানে এফ কমার্সের ৮০ শতাংশই নারী। প্রবন্ধে আরো তুলে ধরা হয় কিভাবে লাল সবুজ ওয়েবসাইটটি প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের ই-কমার্সে অংশগ্রহণকে আরো সহজ করে তুলেছে। এরপর উপ-প্রকল্প পরিচালক জনাব এস এম নাজিমুল ইসলামের পরিচালনায় মুক্ত আলোচনা শুরু হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা তথ্য সেবা কর্মকর্তা এবং নারী উদ্যোক্তাগণ। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের এর মূল উদ্দেশ্য নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা। মাননীয় যুগ্ম সচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৫১% কাজ নারীদের নিয়ে। এই মন্ত্রণালয়ের মূল উদ্দেশ্য নারীদের কর্ম ক্ষেত্রে নিয়ে আসা। তিনি বাইরের দেশে প্রচলিত ‘কেয়ার ইকোনমি’ ধারণাটি বাংলাদেশেও প্রচলনের কথা বলেন। এরপর বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি এবং তথ্য আপা প্রকল্পটির সম্মানিত প্রকল্প পরিচালক জনাব শাহনাজ বেগম নীনা। তিনি বলেন, তথ্য আপা পথ দেখায়। আমাদের নারীদের তৈরি পণ্য একদিন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সুনাম কুড়াবে বিদেশেও, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাগণ কিভাবে আরো সুবিধা পেতে পারেন সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলেন। সর্বশেষ সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব মো: কামরুজ্জামান বলেন, উঠান বৈঠকের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের যেভাবে সেবা দেয়া হচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং বাংলাদেশে অদ্বিতীয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সৈয়দ মাহবুবুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বোয়ালখালী জনাব মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি)বৃন্দ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, চট্টগ্রাম এর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ, বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তর প্রধান ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলা থেকে আসা নারী উদ্যোক্তাবৃন্দ।